মোঃ আমজাদ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় নিখোঁজের ছয় দিন পর রদিয়া আক্তার রুহি (৪) নামের এক শিশুর মরদেহ বাড়ির টয়লেট থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। হৃদয়বিদারক এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শিশুটির সৎমা, চাচা এবং সৎমায়ের বাবা—মোট তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়নের হিমাইল গ্রামের নিজ বাড়ির টয়লেট থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত রুহি কালাই উপজেলার হিমাইল গ্রামের আব্দুর রহমানের প্রথম পক্ষের সন্তান। সে তার মায়ের সঙ্গে পাশের গ্রামে থাকলেও নিয়মিত বাবার বাড়িতে দাদির সঙ্গে দেখা করতে যেত।
গত ২৪ মে সকালে দাদির সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি ছোট্ট রুহি। পরিবারের পক্ষ থেকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়, কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত মেয়ের খোঁজ না পেয়ে পরদিন ২৫ মে কালাই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার মা।
পুলিশ তদন্তে নামে এবং সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রুহির সৎমায়ের বাবা জিয়া কসাইকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়ে জানান, তার মেয়ে সোনিয়া (রুহির সৎমা), রুহির চাচা রনি এবং তিনি মিলে পরিকল্পিতভাবে শিশুটিকে হত্যা করে বাড়ির টয়লেটের ভেতরে ফেলে দেন।
জানা গেছে, সৎমায়ের পরকীয়ার বিষয়টি দেখে ফেলায় রুহিকে হত্যা করা হয় বলে অভিযুক্তরা পুলিশকে জানিয়েছে।
পরে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পুলিশ টয়লেট থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। শিশুটির শরীরে নির্যাতনের চিহ্নও পাওয়া গেছে।
কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তারা হত্যাকাণ্ডের কথা প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয় এলাকাবাসী এমন পাশবিক ঘটনায় হতবাক ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তারা দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।