আশরাফুল ইসলাম, গাইবান্ধা :
গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলা — যা উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবেও পরিচিত — দীর্ঘদিন ধরে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থার চরম সংকটে রয়েছে। বিশেষ করে মহাসড়কের প্রায় ১৫ কিলোমিটার অংশজুড়ে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত ও উন্নত চিকিৎসা না পাওয়ায় প্রাণ হারাতে হচ্ছে অনেককেই, কেউবা পঙ্গুত্ব বরণ করছেন।
পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি মাত্র ৫০ শয্যার হলেও সেখানে চিকিৎসক, টেকনিশিয়ান এবং প্রয়োজনীয় জনবল সংকট লেগেই থাকে। অপরিস্কার পরিবেশ, চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব, আর সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স বা প্রাথমিক চিকিৎসা সুবিধার অপ্রতুলতায় দুর্ঘটনায় আহতদের দ্রুত রংপুর বা বগুড়া নেওয়া হয়, যেখানে পৌঁছাতে এক থেকে দেড় ঘণ্টা লেগে যায়। এই সময়টাই অনেক সময় মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি — মহাসড়কের পাশে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল বা ট্রমা সেন্টার স্থাপন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিকট বহুবার অনুরোধ জানানো হলেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ সচেতন নাগরিকদের।
সচেতন নাগরিক সমাজের নেতা মিজানুর রহমান নিক্সন বলেন, “দুর্ঘটনায় আহতদের উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে একটি ট্রমা সেন্টার এখন সময়ের দাবি।” একই সুরে কথা বলেন সমাজকর্মী মোশফেকুর রহমান মিল্টন, স্বাস্থ্যকর্মী নাঈম আকন্দ এবং প্রেসক্লাব পলাশবাড়ীর সভাপতি মনজুর কাদির মকুল। তাঁদের মতে, চিকিৎসার অভাবে এত মানুষের জীবন ঝরে যাচ্ছে অথচ বিষয়টি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
পলাশবাড়ী রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, এই দাবিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সাংবাদিকরা বারবার উদ্যোগ নিয়েছেন। সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বিভিন্ন সভা-সমাবেশে বিষয়টি তুলে ধরেছেন। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি আজও।
পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল আলম জানান, “মহাসড়কে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে দ্রুত সংশ্লিষ্টদের জানানো হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
উপসংহার:
পলাশবাড়ীর সচেতন নাগরিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। একটি ট্রমা সেন্টার কিংবা বিশেষায়িত হাসপাতাল এখানে স্থাপন হলে শুধু পলাশবাড়ী নয়, আশপাশের বহু জেলার দুর্ঘটনাকবলিত মানুষও সময়মতো উন্নত চিকিৎসা পেতে পারে।