মোঃ বেল্লাল হোসাইন নাঈম, স্টাফ রিপোর্টার:
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের শুল্যুকিয়া গ্রামে নাজেরা জামাতের এক ছাত্রকে বলৎকারের অভিযোগে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক মাওলানা সাইফুল ইসলাম স্থানীয় ইমদাদুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক এবং দক্ষিণ শুল্যুকিয়া জামে মসজিদের খতিব। তিনি একই এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২২ ও ২৩ জুন। সোমবার (৭ জুলাই) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বাদী হয়ে হাতিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২২ জুন রাতে ভুক্তভোগী ছাত্র ঘুমিয়ে থাকার সময় শিক্ষক সাইফুল ইসলাম তাকে বাসায় ডেকে নেন এবং জোরপূর্বক বলৎকার করেন। পরদিন ২৩ জুন দুপুরে ফের একই কৌশলে বাসায় নিয়ে গিয়ে তাকে আবারও বলাৎকার করা হয়।
ঘটনার পর শিশুটির পায়ুতে মারাত্মক ক্ষত ও রক্তক্ষরণ হলে প্রথমে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ১ জুলাই হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয় এবং সেখান থেকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে পুরো এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। একটি প্রভাবশালী মহল অভিযোগটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করলেও ভুক্তভোগী পরিবার আইনের আশ্রয় নেয়।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা জানান,
“আমার ছেলে এখনও গুরুতর অসুস্থ। আমরা সামাজিক লজ্জার কারণে প্রথমে কাউকে বলিনি। কিন্তু এরপরও যারা আমাদের চাপ দিচ্ছে, আমরা তাদের ভয় পাই না। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এদিকে দক্ষিণ শুল্যুকিয়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আক্তার হোসেন জানান,
“ঘটনার কথা শুনেই আমরা শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে নামাজ পড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলেছি। আমরা পরিবারকে আইনি পদক্ষেপ নিতে উৎসাহ দিয়েছি।”
মাদ্রাসার কয়েকজন সাবেক শিক্ষক অভিযোগ করেন,
“সাইফুল ইসলাম এর আগেও এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ড করেছেন। প্রতিবাদ করায় তিনি আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। তাই আমরা মাদ্রাসা ছেড়ে চলে আসি।”
অভিযুক্ত শিক্ষকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন,
“ঘটনার বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”