নিজস্ব প্রতিবেদক:
শেরপুরে গত বছরের ৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান’ চলাকালে তিন কলেজ ছাত্র হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া তিনটি মামলায় মোট ৫০৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, সাবেক চার এমপি (হুইপ), জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ছয় উপজেলা চেয়ারম্যান, চার মেয়র, জেলা প্রশাসনের তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গাড়িচালকসহ আরও অনেকে।
নিহত শিক্ষার্থীরা হলেন—সবুজ মিয়া, মাহবুব আলম ও শারদুল আশীষ সৌরভ। গুলিবিদ্ধ হয়ে ও গাড়িচাপায় এই তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় গত বছর আগস্টে নিহতদের পরিবার সদর থানায় পৃথকভাবে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের প্রায় ১১ মাস পর তদন্ত শেষে চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়।
তদন্তে দেখা যায়, ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এক পর্যায়ে সরকারবিরোধী রূপ নিলে ৪ আগস্ট খরমপুর এলাকায় পাল্টা মিছিল ও সংঘর্ষে প্রাণ হারান সবুজ মিয়া। একই ঘটনায় সরকারি গাড়িচাপায় নিহত হন মাহবুব ও সৌরভ।
সবুজ হত্যায় দায়ের করা মামলায় মোট ২০৫ জনকে আসামি করা হয়। মাহবুব হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় ১৫০ জন এবং শারদুল আশীষ হত্যায় দায়ের হওয়া মামলায় ১৫০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সবগুলো মামলায় স্বনামে অভিযুক্ত প্রায় ৮৭ থেকে ২০৫ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৩০০ থেকে ৪০০ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে।
তবে পুলিশ তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা না পাওয়ায় পুলিশের ডিআইজি, শেরপুরের সাবেক পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা জুলফিকার আলী, ইউপি চেয়ারম্যান খোকন ও সাংবাদিক মেরাজ উদ্দিনসহ মোট ৩৩ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
চার্জশিটে যেসব রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিউর রহমান আতিক, সাধারণ সম্পাদক ছানুয়ার হোসেন ছানু, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, সাবেক সংসদ সদস্য এডিএম শহিদুল ইসলাম, ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলী, সাবেক মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটনসহ আরও অনেকে।
শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “তিনটি মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আদালত যদি চার্জশিট গ্রহণ করে, তাহলে পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হবে এবং অভিযান শুরু হবে।”