1. admin@newsgrambangla.com : নিউজ গ্রামবাংলা :
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নীলফামারীর ঐতিহ্যবাহী নীল কুঠিতে হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধন করলেন লালনকন্যা সালমা বাকেরগঞ্জের কলসকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচনার শীর্ষে মো. জসীমউদ্দীন হাওলাদার পঞ্চগড়ে জমি দখল ও অর্থ আত্মসাৎচেষ্টায় দুই ব্যাংক কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষ কারাগারে নালিতাবাড়ীতে পৃথক ঘটনায় দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার, এক জনের শরীরে হাতির পায়ের চিহ্নের ইঙ্গিত মধুপুরে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে শিল্প ও বণিক সমিতির বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা রাজধানীতে সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে বকশীগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিক্ষোভ মিছিল সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে রাজশাহীতে রাজপথ কাঁপাল শিক্ষার্থীরা: ‘‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না!’’ নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে: উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বকশীগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রাম পুলিশ সদস্য আটক, উদ্ধার ইয়াবা ও হেরোইন মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডে জড়িত কেউ পার পাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে রাজশাহীতে রাজপথ কাঁপাল শিক্ষার্থীরা: ‘‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না!’’

নিউজ গ্রামবাংলা ডেস্ক :
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে
রাজশাহীতে সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল, ব্যানার ও স্লোগানে উত্তাল রাজপথ
মিটফোর্ডে সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ— ‘‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’’ স্লোগানে মুখর গৌরহাঙ্গা রেলগেট এলাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় চাঁদা না দেওয়ায় নির্মমভাবে পাথর নিক্ষেপে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে হত্যার ঘটনায় দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিবাদ। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা রাজপথে নেমে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছেন।

শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১২টা ২০ মিনিট থেকে ১২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার গৌরহাঙ্গা রেলগেট এলাকায় এই বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদী মিছিলটি শুরু হয় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ক্যাম্পাস থেকে। শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মিছিলটি রাজশাহীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে গৌরহাঙ্গা রেলগেটে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে পরিণত হয়।

শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী স্লোগানে কাঁপে রাজপথ

বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা রাজপথ মুখর করে তোলেন জোরালো স্লোগানে। তারা স্লোগান দেন—

  • “চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না”

  • “রক্তে ভেজা আমার ভাই, খুনি তোমার রেহাই নাই”

  • “লীগ গেছে যেই পথে, দল যাবে সেই পথে”

  • “এক-দুই-তিন-চার, চাঁদাবাজ দেশছাড়”

এই প্রতিবাদ শুধু সোহাগ হত্যার বিচার দাবিতেই সীমাবদ্ধ ছিল না—বরং গোটা দেশে বিদ্যমান চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা দুর্বৃত্তচক্রের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।

বক্তব্যে ক্ষোভ আর হুঁশিয়ারি

বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন মেকানিক্যাল বিভাগের শিক্ষার্থী রাতুল ইসলাম, মোহাম্মদ জিহাদ, ইলেকট্রনিক্স বিভাগের আরিফ ও ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের শেখ সাদী। তারা বলেন—
“আজ সোহাগ ভাই মারা গেলেন, কাল হয়তো আমরা কেউ হবো। এই দেশে এখন ব্যবসা করতেও চাঁদা দিতে হয়, আর না দিলে মৃত্যুর মুখে পড়তে হয়। এটা কি স্বাধীন দেশ?”

তারা আরও বলেন, “আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ যখন নিরাপদ না, তখন আমরা চুপ থাকতে পারি না। এভাবে একজন-দুজন করে মরলে একসময় গোটা জাতিই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”

এক শিক্ষার্থী বলেন, “রক্তে রঞ্জিত জুলাই আর চাই না। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। প্রশাসন যদি নিরব থাকে, তবে মানুষই জেগে উঠবে, জেল গেট ভেঙে হলেও বিচার আদায় করে আনবে।”

চাঁদাবাজি ও নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে একত্র শিক্ষার্থীরা

সমাবেশে বক্তারা সরাসরি প্রশ্ন তোলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে। তারা বলেন, “চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট কি প্রশাসনের অজানা? তাদের পেছনে কারা, তা কি সরকারের অজানা? তাহলে কেন এতদিন তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে?”

এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের প্রতি ৩টি দাবি উত্থাপন করেন—
১. সোহাগ হত্যার দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
২. সারা দেশে চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালানো।
৩. সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় ভূমিকা রাখা।

সাধারণ মানুষের স্বস্তি আর শিক্ষার্থীদের বার্তা

এই বিক্ষোভে রাজপথে সাধারণ মানুষেরও অংশগ্রহণ দেখা গেছে। অনেকেই পাশে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের উজ্জীবিত প্রতিবাদে সায় দেন। এক পথচারী বলেন, “এই ছেলে-মেয়েগুলোই এখন আমাদের জন্য কথা বলছে। বড় বড় নেতারা এখন চুপ।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই বিক্ষোভের ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই বলছেন, এই ছাত্রসমাজই আগামীতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। কেউ কেউ এটিকে নতুন এক ছাত্র জাগরণের সূচনা বলেও মন্তব্য করেছেন।

উল্লেখ্য, ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় গত সপ্তাহে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে স্থানীয় এক চাঁদাবাজ গোষ্ঠী পাথর নিক্ষেপ করে নির্মমভাবে হত্যা করে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক প্রকাশ্যে সোহাগের মাথায় পাথর ছুড়ে মারছে।

এ ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ইতোমধ্যে পুলিশ ও র‍্যাব যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে।

সরকারের পক্ষ থেকেও এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদ শুধু একটি হত্যার বিচার দাবিই নয়, বরং দেশজুড়ে চলমান অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার বার্তা বহন করে। আজ রাজশাহীর রাজপথে যে প্রতিবাদ হয়েছে, তা হয়তো সাময়িক; কিন্তু এর প্রতিধ্বনি পৌঁছে যাবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত নিউজ গ্রামবাংলা-২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট