মনিরুজ্জামান লিমন, বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি:
জামালপুরের বকশীগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ১৫ গ্রাম হেরোইনসহ এক গ্রাম পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তি শ্রী রঙ্গিলা রবিদাস (৩৫), বকশীগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে কর্মরত ছিলেন।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দিবাগত মধ্যরাতে বকশীগঞ্জ পৌরসভার মালিরচর মণ্ডলপাড়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে অংশ নেয় বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ, র্যাব ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ টিম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত রঙ্গিলা রবিদাস ওই এলাকার শ্রী হরিয়া দাসের ছেলে। পেশায় তিনি একজন গ্রাম পুলিশ হলেও দীর্ঘদিন ধরে গোপনে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এলাকার মানুষের অভিযোগ ছিল, তিনি তার নিজস্ব কীটনাশক দোকানের আড়ালে এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করতেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী শুক্রবার মধ্যরাতে তার দোকানে হঠাৎ অভিযান চালায়। অভিযানের সময় দোকান থেকে ২০ পিস ইয়াবা ও ১৫ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় রঙ্গিলা রবিদাসকে।
পরে তাকে জামালপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আবদুল হালিম রাজ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “আটককৃত রঙ্গিলা রবিদাসের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাকে দ্রুত আদালতে প্রেরণ করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “গ্রাম পুলিশের মতো দায়িত্বশীল পদে থেকে কেউ যদি এমন অপরাধে জড়িত থাকে, তা দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য মারাত্মক হুমকি। তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় বকশীগঞ্জ পৌর এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, যারা জনগণের নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত, তারাই যদি মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে, তবে সমাজ ধ্বংসের দিকে যাবে।
বকশীগঞ্জ থানার একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, “গ্রাম পুলিশ হিসেবে রঙ্গিলা রবিদাস দায়িত্ব পালনের আড়ালে অপরাধে জড়িত ছিলেন। তার মতো ব্যক্তিরা পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। এমন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
উল্লেখ্য, বকশীগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এখানে মাদকের প্রবেশ ও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সবসময়ই থাকে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে।
এই ঘটনার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হলো, মাদক নির্মূল করতে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের ওপরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।