আবুল হাশেম, রাজশাহী ব্যুরো:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের আড়পাড়া নতুনপাড়া গ্রামে দুই সন্তানের জননী শিউলি বেগম (৩২) আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গত ২৩ জুলাই রাতে স্বামীর বাড়িতে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
শিউলি বেগম স্থানীয় মোহাম্মদ সাজেদুল হকের স্ত্রী। তার ১০ বছরের একটি ছেলে এবং ১ বছর বয়সী কন্যা সন্তান রয়েছে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২৩ জুলাই রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে স্বামীর বাড়ির একটি কক্ষে শিউলি বেগম গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্বজনরা দ্রুত বিষয়টি বুঝতে পেরে গলার রশি কেটে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) রেফার করেন।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে, রাজশাহীর উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে পথেই ২৪ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন স্বজনেরা।
ঘটনার পরপরই বাঘা থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠায় এবং পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করে। বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ ফ ম আসাদুজ্জামান বলেন, “ভিকটিমের স্বামীর বাড়ি থেকে খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠিয়েছি। একজন পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত করছেন। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অস্বাভাবিক মৃত্যু) মামলা করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়দের অনেকে জানান, শিউলি বেগম একজন শান্ত ও সংসারী নারী ছিলেন। তবে পারিবারিক জীবনে কোনো অশান্তি ছিল কিনা বা মানসিক চাপের কারণেই কি তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।
এদিকে, দুই শিশুর মাকে হারিয়ে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। অসহায় হয়ে পড়েছে তার সন্তানরা। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা এই মর্মান্তিক ঘটনায় দারুণভাবে মর্মাহত।
পুলিশ বলছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে এবং কারও বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।