রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় মালশন-গিরিগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী আজাহার আলী (৩৫) কে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার মালশন মন্ডলপাড়া গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহত আজাহার আলী মালশন গ্রামের মৃত মজিবর প্রমাণিকের ছেলে এবং উক্ত স্কুলে দীর্ঘদিন ধরে নৈশপ্রহরীর দায়িত্বে রয়েছেন।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার রাতে আজাহার আলী প্রতিদিনের মতো স্কুলের গেট খোলার সময় হঠাৎ করে ৪ থেকে ৫ জন দুর্বৃত্ত তার ওপর দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা আজাহারকে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে রাণীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আহতের পরিবার ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের পুরনো বিরোধের জের ধরেই এই হামলা চালানো হয়েছে। আহত আজাহার আলী জানান, “রাত ১২টার দিকে স্কুলের গেট খুলে বের হওয়ার সময় হঠাৎ কয়েকজন এসে আমাকে কোপাতে শুরু করে। তাদের মধ্যে দুইজনকে আমি চিনেছি—বেলাল হোসেন ও আনোয়ার হোসেন। বাকিদের চিনতে পারিনি। কয়েক বছর আগের একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তারা এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছি। আমি এই হামলার বিচার ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

এ ঘটনার পরপরই উত্তেজিত গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি—বেলাল হোসেন ও আনোয়ার হোসেনকে আটক করে রাণীনগর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাফিজ মো. রায়হান বলেন, “আহতের স্ত্রী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে দুইজনকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। অপর আসামিদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”

এদিকে এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় বাসিন্দা, স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা নৈশপ্রহরীর ওপর এমন নির্মম হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এই হামলার ঘটনাটি এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং স্কুলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারেরও দাবি উঠেছে।