কাটা হাত কাপড়ে মুড়িয়ে থানায় হাজির স্ত্রী, আহত ৬
আলমগীর হোসেন সাগর
স্টাফ রিপোর্টার, নিউজ গ্রামবাংলা
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
গাজীপুর, শ্রীপুর
গাজীপুরের শ্রীপুরে জমি নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় হযরত আলী (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের হাতের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বরমী ইউনিয়নের তাতীসূতা গ্রামে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে উভয় পক্ষের মোট ছয়জন আহত হন। আহতরা হলেন—হযরত আলী (৬৫), তার স্ত্রী জাহারা (৬০), আত্মীয়া রহিমা (৫৫), এবং অপর পক্ষের অমূল্য কুমার বিশ্বাস (৬২), অমৃত কুমার বিশ্বাস (৬০) ও সংগীতা (১৭)। গুরুতর আহত হযরত আলীকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হযরত আলীর বাড়ির পাশের একটি বনভূমিতে তিনি উপকারভোগী হিসেবে বহুদিন ধরে গাছ লাগিয়ে বনায়ন করে আসছিলেন। ওই জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল অমৃত কুমার বিশ্বাস ও তার পরিবারের সঙ্গে। ঘটনার দিন সকালে অমৃত কুমার বিশ্বাস জমিতে হালচাষ করতে গেলে হযরত আলী বাধা দেন, এবং সেখান থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত।
হযরত আলীর স্ত্রী রহিমা জানান, “অমৃত কুমার বিশ্বাস টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে আমাদের হুমকি দিয়ে আসছেন। আজ সকালে আমাদের গাছ কেটে জমি দখলের চেষ্টা করলে আমরা বাধা দিই। তখন অমৃত দা দিয়ে আমার স্বামীর বাম হাতের কব্জি কেটে ফেলে। আমি নিজ হাতে সেই কাটা হাত কাপড়ে মুড়িয়ে থানায় নিয়ে যাই।”
অন্যদিকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য অমৃত কুমার বিশ্বাস দাবি করেন, “ওই জমি আমাদের। বন বিভাগের সঙ্গে জমি নিয়ে পূর্ব থেকেই আমাদের বিরোধ রয়েছে। আজ সকালে চাষ করতে গেলে হযরত আলীর লোকজন আমাদের বাধা দেয় ও মারধর করে।”
শ্রীপুর সদর বিটের ফরেস্টার মো. আলাল খান জানান, “জমিটি হযরত আলী উপকারভোগী হিসেবে পেয়েছিলেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বনায়ন নষ্ট করার অভিযোগ আগেও ছিল। আজকের ঘটনার বিস্তারিত তথ্য এখনও আমার হাতে নেই।”
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শামীম আক্তার বলেন, “সকালে এক বৃদ্ধা থানায় এসে তার স্বামীর কাটা হাত দেখিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়েছে এবং একজনকে আটক করেছে। তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মন্তব্য:
ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ভূমি সংক্রান্ত বিরোধে পুলিশ সদস্যের এমন ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে—এটাই এলাকাবাসীর প্রত্যাশা।