মনিরুজ্জামান লিমন
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
জামালপুরের বকশীগঞ্জে অটোরিকশার ধাক্কায় তানহা আক্তার (৩) নামে এক নিষ্পাপ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌর এলাকার সীমার পাড় জেলখানা রোডে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশু তানহা ওই এলাকার জালাল উদ্দিনের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, তানহার মা লাকী বেগম তাকে বাসায় রেখে স্থানীয় এক মুদি দোকানে বাজার করতে বের হন। তবে মায়ের পেছন পেছন শিশুটি নিজের মতো করেই রওনা দেয় দোকানের দিকে। তখন সে একা রাস্তা পার হওয়ার চেষ্টা করলে, হঠাৎ একটি দ্রুতগামী অটোরিকশা এসে তাকে সজোরে ধাক্কা দেয়।
দুর্ঘটনার পরপরই আশপাশের মানুষ ছুটে আসে। গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিকভাবে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তানহাকে মৃত ঘোষণা করেন। তানহার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অটোরিকশাটি অনেক বেশি গতিতে ছিল। চালক এলাকাবাসীর সাহায্যে গাড়ি রেখে পালিয়ে যায়। ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা ঘটনার পর কিছুক্ষণ সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ বলেন, “শিশু মৃত্যুর ঘটনায় আমরা গভীরভাবে শোকাহত। অভিযুক্ত অটোরিকশাটি জব্দ করা হয়েছে। চালককে চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে এবং আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”
শিশু তানহার মৃত্যুতে এলাকাবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও শোক প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত বিচার ও চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, বকশীগঞ্জের এই সীমার পাড় এলাকার জেলখানা রোডে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে কোনো স্পিড ব্রেকার নেই। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, স্কুল, দোকান ও বসতি এলাকায় এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
এই শিশুর মৃত্যুর ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, পথচারীদের নিরাপত্তা, বিশেষ করে শিশুদের সুরক্ষায় আরও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও এমন করুণ দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কার্যকর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও সচেতনতার অভাবে শিশুরা বলি হচ্ছে বেপরোয়া গতির যানবাহনের।
তানহার অকাল মৃত্যুতে শুধু একটি পরিবার নয়, গোটা এলাকাই শোকস্তব্ধ। শিশুটির জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে।