মোঃ বেল্লাল হোসাইন নাঈম | স্টাফ রিপোর্টার | ১৩ মে ২০২৫
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার কোটবাড়িয়া এলাকায় মাটি বিক্রিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে জাকির হোসেন (৪০) নামের এক যুবলীগ কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। জাকিরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও তিনি সম্প্রতি ধর্মীয় কার্যক্রম শেষে এলাকায় ফিরে আবার ব্যবসা শুরু করেন।
জাকির হোসেন উপজেলার ৮ নম্বর সোনাপুর ইউনিয়নের তিনতড়ি এলাকার রফিক মিয়ার ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ ১৩টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
একসময় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি তাবলিগে চলে যান। মুখে দাঁড়ি রেখে ফিরে এসে এলাকায় মাটির ব্যবসা শুরু করেন।
জাকির প্রতি গাড়ি মাটি ১,২০০ টাকায় বিক্রি করতেন, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী চক্র ১,৬০০ টাকায় বিক্রি করতো। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল বিরোধ। কয়েক দিন আগে দুর্বৃত্তরা তার ভেকু মেশিন পুড়িয়ে দেয়।
মঙ্গলবার দুপুরে তাকে কৌশলে তুলে নিয়ে কোটবাড়িয়া এলাকায় মারধর করা হয় এবং পরে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা। বিকেলে পাঁচজন সিএনজি অটোরিকশায় করে লাশ বেগমগঞ্জ উপজেলার পলবান পোল এলাকায় নিয়ে গিয়ে ফেলে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে দুজনকে আটক করে।
নিহতের স্ত্রী ফাতিমা বেগম হিরা দাবি করেন, বিএনপি-জামায়াতের লোকজন তাকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে। তিনি স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়া বাবু নামে একজনকে বিএনপি কর্মী হিসেবে চিহ্নিত করেন।
তবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, বিএনপি কোনো সহিংসতা সমর্থন করে না। জামায়াতের স্থানীয় নেতৃত্ব এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য দেয়নি।
সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম জানান, নিহত জাকির একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ছিল এবং তার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। বেগমগঞ্জ থানায়ও তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিবুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং আটক দুজন চিকিৎসাধীন রয়েছে।