মোঃ আমজাদ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার রাঘবপুর চৌমুহনী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার সদস্যের অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এতে সভাপতি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন কালাই ডিগ্রি কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (পিয়ন) জহুরুল ইসলাম। সিদ্ধান্তটি প্রকাশ্যে আসতেই এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
সূত্র জানায়, গত ২১ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান জিয়াউল হকের স্বাক্ষরিত এবং বিদ্যালয় পরিদর্শকের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক বরাবর প্রেরিত চিঠির মাধ্যমে এ কমিটির অনুমোদন জানানো হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন— প্রধান শিক্ষক (পদাধিকারবলে) সচিব সদস্য, অভিভাবক সদস্য জিয়াউল ইসলাম এবং শিক্ষক প্রতিনিধি সেলিনা আখতার।
নবনিযুক্ত সভাপতি জহুরুল ইসলাম জয়পুরহাটের জিন্দারপুর ইউনিয়নের বেগুনগ্রামের বাসিন্দা এবং মো. ইয়াহিয়ার পুত্র। বয়স ৩৮ বছর। বর্তমানে তিনি কালাই ডিগ্রি কলেজে পিয়ন পদে কর্মরত। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ পদে বসেছেন।
এ বিষয়ে জহুরুল ইসলাম বলেন, “আমি যোগ্য ছিলাম বলেই আবেদন করেছিলাম, এবং বোর্ড সেটি বিবেচনায় নিয়েছে। চাকরিরত হলেই কি আমি সভাপতি হতে পারি না?”
অন্যদিকে বিএনপির স্থানীয় নেতা ও কারাবন্দি-ভুক্তভোগী ফোরকান বলেন, “এই বিদ্যালয় আমরা এলাকাবাসী মাটি, বাঁশ, কাঠ আর শ্রম দিয়ে গড়ে তুলেছি। অথচ এখন এর নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে আওয়ামী লীগের দোসরদের হাতে। বর্তমান প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা মিনফুজুর রহমান মিলনের খালাতো ভাই। তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রধান শিক্ষক হয়েছেন এবং সম্প্রতি এমপিওভুক্তির পর মোটা অঙ্কের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “একাধিক গণমাধ্যমে এসব নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
স্থানীয় বৈরাগী বাজারের বাসিন্দা মাহবুব, কালাম, ইজার আলী ও জলিল বলেন, “ওয়াহেদ মাস্টার ছিলেন এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা। অথচ আজ একজন পিয়নকে সভাপতি করে বিদ্যালয়টির মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে। আমরা এই অবমূল্যায়নের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”