বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, “কারও দল গোছানোর কিংবা আন্তর্জাতিক বন্ধু জোগাড় করার প্রয়োজন থাকলেও, তার জন্য দেশের জনগণের ভোটাধিকার চর্চা বিলম্বিত হতে পারে না।” তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে, অন্যথায় জনগণ তাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলনে নামবে।
শুক্রবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘শোষণমুক্ত সমাজ গঠনে মাওলানা মতিনের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে এ মন্তব্য করেন নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, গত আগস্টে ঘোষিত এক দফা আন্দোলনের একটি ধাপ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। এখন জনগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে বাকী দাবি পূরণের জন্য। দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর ধরে সাধারণ মানুষ প্রকৃত ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি।
“আজ দেশের বহু তরুণ আছেন যারা অনেক আগে ভোটার হয়েছেন, কিন্তু এখনো পর্যন্ত ভোট দিতে পারেননি। তারা এই অধিকার প্রয়োগ করতে চায়। এটিই তাদের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক অধিকার।”
নজরুল ইসলাম খান বলেন, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে জানিয়েছে যে, তারা জুন মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবে। তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে সমস্যা কোথায়?
তিনি বলেন,
“অনেকে বলছেন, আগে সংস্কার দরকার। কিন্তু আমরা তো বহু আগেই সংস্কার কর্মসূচি দিয়েছি—১৯৭৬ সালে শহীদ জিয়া ১৯ দফা, ২০১৬ সালে খালেদা জিয়ার ২০৩০ ভিশন, ২০২২ সালে তারেক রহমানের ২৭ দফা, এবং ২০২৩ সালে আন্দোলনকারীদের অংশগ্রহণে ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়।”
নজরুল ইসলাম খান বলেন,
“আমরা সংস্কারের বিপক্ষে না। তবে সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি সংবিধান ও আইনের মাধ্যমে ধাপে ধাপে বাস্তবায়নযোগ্য।”
তিনি আরও বলেন, মে মাসের মধ্যে সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব। এর ভিত্তিতে জুন মাসের মধ্যে একটি জাতীয় সনদ প্রস্তুত করে, তাৎক্ষণিক সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করা যেতে পারে, বাকিগুলো নির্বাচিত সংসদে।
“এক্ষেত্রে নির্বাচন পেছানোর কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই। জনগণের ভোটাধিকার চর্চার অধিকার বিলম্বিত হওয়া উচিত নয়।”
নজরুল ইসলাম খান বলেন, জনগণের নির্বাচিত সরকার ধীরগতির হতে পারে, ভুলও করতে পারে, কিন্তু এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, লেবার পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান ইরান, মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।