আবুল হাশেম, রাজশাহী ব্যুরো:
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার ৮ নম্বর বাসুদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানোর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বেলা ১১টায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি ও ওই ইউপির ৮ জন সদস্য এই অভিযোগ তুলে ধরেন।চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, তিনি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীককে হারিয়ে বিজয়ী হন এবং এলাকাবাসীর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। তবে পরাজিত প্রার্থী মাহফুজুর রহমান ডালিমের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে।
তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৮ জুন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালানো হয়। তাকে জিম্মি করে একটি টাইপকৃত পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়। দেশীয় অস্ত্র ও প্রাণনাশের হুমকির মুখে তিনি অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বাক্ষর করেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ৪০-৫০ জন লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত লোক কার্যালয়ে প্রবেশ করে এবং নজরুল ইসলামকে জোর করে তালাবদ্ধ করে ফেলে।
পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।সংবাদ সম্মেলনে ইউপি সদস্যগণ ও স্থানীয়রা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের দাবি জানান।
চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, “আমি প্রাণনাশের আশঙ্কায় স্বাক্ষর করেছি। এখন সরকারের কাছে অনুরোধ করছি—সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া পদত্যাগপত্র উদ্ধার করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মাহফুজুর রহমান ডালিম দাবি করেন, তিনি ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন এবং তার পরিবারের কেউও উপস্থিত ছিলেন না।
গোদাগাড়ী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ও সেনাবাহিনী সেখানে যাই এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। সন্ত্রাসীরা পরে ইউএনও কার্যালয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ দেয়।”
তবে ইউএনও ফয়সাল আহমেদ-এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।এ ঘটনায় গোদাগাড়ীতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, একজন জনপ্রতিনিধিকে জোর করে পদত্যাগ করানো নজিরবিহীন এবং গণতন্ত্রের প্রতি চরম অবমাননা।