মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি:
সন্তানকে কোলে নিয়ে এক হাতে মোবাইল, অন্য হাতে বই—এভাবেই প্রতিদিন কিছুটা সময় পড়াশোনায় কাটান মনিরা ইয়াসমিন মুক্তা। প্রায় দুই বছর আগে পড়াশোনা শেষ করলেও ছোট সন্তানের কারণে বাইরে গিয়ে কোচিং করার সুযোগ ছিল না তার। তবে নিজের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রস্তুতির অভাবে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছিলেন না তিনি। ঠিক তখনই একদিন এক পরিচিতের কাছ থেকে জানতে পারেন ‘প্রিয় শিক্ষালয়’ অ্যাপ সম্পর্কে। গুগল প্লে-স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে ব্যবহার শুরু করেন, যা এখন তার নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতির একমাত্র ভরসা।
শুধু মনিরা নন, অভিজিৎ চক্রবর্তীর গল্পও অনেকটা একই রকম। আনন্দমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ভোটানিতে পড়াশোনা শেষে পারিবারিক কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ফেসবুকে ‘প্রিয় শিক্ষালয়’ অ্যাপের একটি বিজ্ঞাপন দেখে তা ডাউনলোড করেন এবং অ্যাপ ব্যবহার করেই উত্তীর্ণ হন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায়। এখন তিনি একজন সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষক।
মনিরা ও অভিজিৎ-এর মতো আরও হাজারো চাকরি প্রত্যাশীর জন্য ‘প্রিয় শিক্ষালয়’ হয়ে উঠেছে আশার আলো। ২০২৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করা এই অ্যাপটি ইতোমধ্যে গুগল প্লে-স্টোরে এক লাখেরও বেশি ডাউনলোড অতিক্রম করেছে। প্রযুক্তিনির্ভর এ উদ্যোগটি দেশের বেকারত্ব সমস্যার সমাধানে সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিয়েছে।
শুধু চাকরি প্রার্থীরাই নয়, এই অ্যাপ উপকারে আসছে অভিভাবক, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাওয়া শিক্ষার্থীদেরও। এখানে রয়েছে বিসিএস, ব্যাংক, শিক্ষক নিবন্ধন, প্রাথমিক শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয় ও নার্সিং ভর্তি, আইনজীবী এনরোলমেন্টসহ প্রায় সব বড় নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতির কনটেন্ট।
প্রিয় শিক্ষালয়ের প্রধান নির্বাহী মহিউদ্দিন সোহেল জানান, “একটি তথ্যভিত্তিক, সাশ্রয়ী ও বিশ্বাসযোগ্য প্রস্তুতির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ‘প্রিয় শিক্ষালয়’ যেন প্রতিটি চাকরি প্রত্যাশীর হাতে পৌঁছে যায়, সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি আমরা। অ্যাপটি শুধু কনটেন্ট সরবরাহই নয়, বরং ফল বিশ্লেষণ, ভুল চিহ্নিতকরণ এবং তুলনামূলক পারফরম্যান্স দেখিয়ে একজন ব্যবহারকারীকে উন্নত প্রস্তুতির দিকনির্দেশনা দেয়।”
অ্যাপটির বর্তমান রেটিং ৪.৮, যা ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্টির স্পষ্ট ইঙ্গিত। রিভিউ ঘেঁটে জানা যায়, অনেকে এই অ্যাপ ব্যবহার করেই চাকরি পেয়েছেন, বদলে গেছে তাদের জীবন।
প্রশিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, “প্রযুক্তি এখন শহর ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে অজপাড়া গ্রামে। ‘প্রিয় শিক্ষালয়’ তার বাস্তব উদাহরণ—যেখানে গ্রামের শিক্ষার্থীও ঘরে বসে নিয়োগ প্রস্তুতি নিতে পারছে। এটা শুধু একটি অ্যাপ নয়, বরং সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।