মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি :
শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ১০ জন বাংলাদেশিকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার (১১ জুলাই) ভোররাতে উপজেলার পানিহাটা নামক এলাকা দিয়ে এই পুশইন করে বিএসএফ-এর বাবুরামবিল ক্যাম্পের সদস্যরা। পুশইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ, ৬ জন নারী রয়েছেন, যাদের মাঝে কয়েকজন শিশু রয়েছে বলেও জানা গেছে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নের (৩৯ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, পুশইন হওয়া এসব ব্যক্তি প্রায় দুই বছর আগে কাজের সন্ধানে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সীমান্তপথ ব্যবহার করে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন এবং সেখানে নয়াদিল্লীতে অবস্থান করছিলেন। তারা ভারতে বসবাসের সময় কোনো বৈধ কাগজপত্র বা ভারতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় সম্প্রতি ভারতের পুলিশ একটি বিশেষ অভিযানে তাদের আটক করে।
আটকের পর ভারতীয় পুলিশ তাদেরকে বিমানযোগে নয়াদিল্লী থেকে আসামের গৌহাটিতে নিয়ে যায়। পরে বিএসএফ-এর ২২ ব্যাটালিয়নের বাবুরামবিল ক্যাম্পের সদস্যরা শুক্রবার ভোরে বাংলাদেশ সীমান্তে এনে তাদের পুশইন করে।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, পুশইন হওয়া এসব নাগরিকদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হয়। পরে তাদের এবং তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, তারা সকলেই সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার সাহাজাদপুর গ্রামের বাসিন্দা। আইন অনুযায়ী সীমান্ত অতিক্রমকারী এসব ব্যক্তিকে বিজিবি আটক করে এবং পরবর্তীতে নালিতাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করে।
এ ঘটনায় স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা মনে করছেন, সীমান্তপথে এ ধরনের অনুপ্রবেশ এবং পরে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পুশইনের ঘটনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও মানবাধিকার রক্ষার দিক থেকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত।
স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি নিয়ে অধিকতর তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে জানা গেছে।
সংবাদের উপসংহারে বলা যায়, সীমান্তে পুশইনের এ ধরনের ঘটনা শুধু নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নয়, বরং রাষ্ট্রীয় স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক চুক্তির বিষয়ও। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এমন ঘটনায় যথাযথ কূটনৈতিক পদক্ষেপ আশা করছেন সচেতন মহল।