
মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মদসহ এক যুবককে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার গোমরা এলাকা থেকে ২৫৮ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধারসহ আক্তার মিয়া নামে যুবককে আটক করা হয়। বিজিবি জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত মদের বাজারমূল্য প্রায় ৪ লাখ ১৩ হাজার টাকা।
ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়ন (৩৯ বিজিবি)-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মেহেদী হাসান সংবাদদাতাকে জানান, “আমাদের কাছে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য আসে যে, গোমরা সীমান্ত এলাকায় কিছু লোক অবৈধভাবে ভারতীয় মদ বাংলাদেশে প্রবেশ করাচ্ছে। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে হলদীগ্রাম বিজিবি আউটপোস্টের টহলদলকে অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেই।”
তিনি আরও জানান, “টহলদলের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে গোমরা সীমান্ত এলাকা থেকে ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নিষিদ্ধ মদসহ আক্তার মিয়াকে আটক করে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাকে ঝিনাইগাতী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, শেরপুরের ঝিনাইগাতী সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় মদ ও অন্যান্য মাদকদ্রব্যের অবৈধ আমদানি একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। স্থানীয়রা জানান, সীমান্ত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা না থাকায় পাচারকারীরা নিয়মিতভাবে অবৈধ পণ্য প্রবেশ করাচ্ছে।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, আটককৃত যুবক আক্তার মিয়া সীমান্ত পার হওয়া পণ্যগুলো সরাসরি বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করছিল। অভিযানে উদ্ধারকৃত মদ স্থানীয় বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত ছিল। এই ধরনের অভিযান বিজিবি নিয়মিতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে যাতে সীমান্ত এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
অভিযানের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনও সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, “বিজিবি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে কাজ করলে সীমান্তে অবৈধ কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এই ধরনের অভিযান স্থানীয় মানুষের জন্যও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে।”
এছাড়া, বিজিবি কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, “সীমান্ত এলাকায় অবৈধভাবে ভারতীয় মদ, মাদক বা অন্য কোনো পণ্য আনা-নেওয়া করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণকে সচেতন থাকতে হবে এবং এমন কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।”
এই অভিযান প্রমাণ করে যে, সীমান্তবর্তী এলাকা বিশেষ করে গোমরা, হলদীগ্রাম ও ঝিনাইগাতী এলাকায় বিজিবি নিয়মিতভাবে নজরদারি রাখছে এবং অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে উদ্যোগী। কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে যাতে সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং জনগণ নিরাপদে থাকতে পারে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আটককৃত যুবকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান আছে। তার অবৈধ কর্মকাণ্ডের সাথে আরও কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করার জন্য বিজিবি ও স্থানীয় থানা যৌথভাবে কাজ করছে।
সর্বশেষ, ঝিনাইগাতী সীমান্তে বিজিবির এই সফল অভিযানের মাধ্যমে স্থানীয়দের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার গুরুত্ব আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এবং সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা আরও দৃঢ় হয়েছে।