1. admin@newsgrambangla.com : নিউজ গ্রামবাংলা :
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১১:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
নীলফামারীর ঐতিহ্যবাহী নীল কুঠিতে হস্তশিল্প মেলার উদ্বোধন করলেন লালনকন্যা সালমা বাকেরগঞ্জের কলসকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আলোচনার শীর্ষে মো. জসীমউদ্দীন হাওলাদার পঞ্চগড়ে জমি দখল ও অর্থ আত্মসাৎচেষ্টায় দুই ব্যাংক কর্মকর্তা ও অধ্যক্ষ কারাগারে নালিতাবাড়ীতে পৃথক ঘটনায় দুই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার, এক জনের শরীরে হাতির পায়ের চিহ্নের ইঙ্গিত মধুপুরে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে শিল্প ও বণিক সমিতির বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা রাজধানীতে সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে বকশীগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিক্ষোভ মিছিল সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে রাজশাহীতে রাজপথ কাঁপাল শিক্ষার্থীরা: ‘‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না!’’ নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে: উপ-প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার বকশীগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রাম পুলিশ সদস্য আটক, উদ্ধার ইয়াবা ও হেরোইন মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডে জড়িত কেউ পার পাবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাধ্যতামূলক ছুটিতে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল: দুর্নীতি মামলার পর বিতর্কিত আঞ্চলিক পরিচালককে সরানো হলো

নিউজ গ্রামবাংলা ডেস্ক :
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে
সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছুটি ঘোষণা
ফাইল ছবি। সংগৃহীত দুর্নীতির অভিযোগে WHO-এর আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ের (SEARO) আঞ্চলিক পরিচালক এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে। শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসুস।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মীদের পাঠানো এক অভ্যন্তরীণ ইমেইল বার্তায় জানানো হয়, সায়মা ওয়াজেদের ছুটির সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে ১১ জুলাই থেকে এবং তার অনুপস্থিতিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দায়িত্ব পালন করবেন সংস্থার সহকারী মহাপরিচালক ড. ক্যাথরিনা বোহমি। তিনি আগামী ১৫ জুলাই ভারতের নয়াদিল্লি অফিসে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

সায়মা ওয়াজেদের ছুটিতে যাওয়ার খবরটি এমন এক সময়ে এল, যখন তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রতারণা, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ এনে দুটি মামলা দায়ের করেছে। অভিযোগগুলো ঘিরে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছিল, যার প্রভাব শেষ পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হলো।

২০২৫ সালের শুরুতেই দুদক সায়মার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। অভিযোগে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক পরিচালক পদে মনোনয়নের সময় তিনি তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পেশাগত অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত নথিপত্রে মিথ্যা তথ্য প্রদান করেন। আরও বলা হয়, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সম্মানসূচক পদে থাকার দাবি করে এই চাকরির জন্য প্রভাব বিস্তার করেন।

দুদক জানায়, সায়মা তার ব্যক্তিগত সংস্থা “সূচনা ফাউন্ডেশন”-এর নামে ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার অর্থ আত্মসাত করেন। এই অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রভাব খাটিয়ে উত্তোলন করা হয়। এসব অনিয়মের ভিত্তিতেই তার বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন সায়মা ওয়াজেদ। তবে তার এই নিয়োগ শুরু থেকেই সমালোচিত হয়। অনেক আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পর্যবেক্ষক দাবি করেন, তার নিয়োগে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ ছিল। বিশেষ করে তার মা শেখ হাসিনা কর্তৃক কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে ভোটে প্রভাব খাটানো হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও সদস্য রাষ্ট্রগুলো এই নিয়োগকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে যুক্ত একটি অনুসন্ধানী সংস্থা “হেলথ পলিসি ওয়াচ” জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতেই সংস্থার অভ্যন্তরে সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে একটি গোপন তদন্ত শুরু হয়।

সায়মার ছুটির বিষয়টি সামনে আসার পর আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক বিশ্লেষক এটিকে “আস্থা হারানোর প্রমাণ” হিসেবে দেখছেন। তারা বলছেন, একজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশাগত অবস্থান এবং আর্থিক লেনদেন নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেন, তাহলে পুরো সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যদি এমন বিতর্কিত নিয়োগ দেয় এবং তা দীর্ঘ সময় ধরে ধরে রাখে, তাহলে সুশাসন ও জবাবদিহিতার বিষয়টিও প্রশ্নের মুখে পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, এই সিদ্ধান্তটি সংস্থার ভেতরে ও বাইরে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি বার্তা পাঠায়। সায়মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে পদক্ষেপ নিয়ে WHO দেখাতে চাচ্ছে যে, তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে “শূন্য সহনশীলতা” নীতি বাস্তবায়নে আন্তরিক।

বর্তমানে WHO-এর সহকারী মহাপরিচালক ড. ক্যাথরিনা বোহমি আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি একজন অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য প্রশাসক এবং দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন আঞ্চলিক দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যদি দুদকের অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠিন আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। একইসাথে WHO-ও তার স্থায়ী পদ বাতিলের পথে এগোতে পারে।

সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ছুটির খবর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই সিদ্ধান্তকে “আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত দুর্নীতির প্রমাণ” বলে আখ্যা দিচ্ছে। তারা বলছে, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে শেখ হাসিনার পরিবার আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বিতর্কিত হয়ে উঠেছে।

অন্যদিকে, সরকারি দল ও সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো এই বিষয়টি নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর ঘটনাটি একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, অন্যদিকে এটি দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, এই ঘটনাটি ভবিষ্যতে কিভাবে ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত নিউজ গ্রামবাংলা-২০২৫, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট