মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর:
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় হত্যা মামলায় ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক এক কয়েদীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শনিবার (১২ জুলাই) গভীর রাতে উপজেলার বাবলাকোনা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ওই ব্যক্তির নাম নজরুল ইসলাম (৪৫)। তিনি শ্রীবরদী উপজেলার বাবলাকোনা গ্রামের মৃত নইমুদ্দিনের ছেলে। র্যাব জানায়, নজরুল ইসলাম হত্যা মামলায় আদালত কর্তৃক ৩০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি ছিলেন এবং গত বছরের আগস্টে কারাগার থেকে পালিয়ে যান।
র্যাব-১৪, সিপিসি-১, জামালপুর ক্যাম্পের একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করে।
শনিবার রাত আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটে নজরুল ইসলামকে বাবলাকোনা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সরকার পতনের প্রেক্ষাপটে শেরপুর জেলা কারাগারে ভয়াবহ এক হামলা চালানো হয়।
সেদিন রাতেই কয়েক হাজার সশস্ত্র দুষ্কৃতিকারী জেলখানায় হামলা চালিয়ে কারা প্রহরীদের বাধা উপেক্ষা করে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং ৫১৮ জন হাজতি ও কয়েদী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এই ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে। এরপর থেকেই জেলা প্রশাসন, কারা কর্তৃপক্ষ ও র্যাব-১৪ যৌথভাবে পালাতকদের ধরতে বিশেষ অভিযান শুরু করে।
সেই তালিকায় ছিল নজরুল ইসলাম নামের এই হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত কয়েদীর নামও।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নজরুল ইসলামের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর শনিবার রাতেই র্যাবের আভিযানিক দল অভিযানে নামে। সফল অভিযানে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব সদস্যরা।
র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নজরুল ইসলাম হত্যা মামলায় দীর্ঘমেয়াদী সাজাপ্রাপ্ত একজন বিপজ্জনক আসামি। তিনি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থেকে অবস্থান পরিবর্তনের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে চলছিলেন। অবশেষে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।
গ্রেফতারের পর নজরুল ইসলামকে শনিবার দুপুরে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শ্রীবরদী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাকে পুনরায় জেলহাজতে পাঠানো হবে এবং আগের মামলার সাজা কার্যকর করার পাশাপাশি নতুন করে পালানোর অপরাধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
সাজাপ্রাপ্ত একজন পলাতক আসামির গ্রেফতারের ঘটনায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয়রা র্যাবের এই অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর তৎপরতার প্রশংসা করেছেন।
র্যাব সূত্র জানিয়েছে, কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া অন্যান্য আসামিদেরও চিহ্নিত করে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারা দেশব্যাপী নজরদারি এবং তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে পালাতকদের অবস্থান নিশ্চিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে।