মনিরুজ্জামান লিমন
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সারা দেশের মতো জামালপুরের বকশীগঞ্জেও ক্ষোভে ফেটে পড়ে এনসিপি নেতা-কর্মীরা।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে বকশীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করে এনসিপি উপজেলা ও পৌর শাখা।
বিকেল ৪টার দিকে কামারপট্টিস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড মোড়ে এসে শেষ হয়। পরে সেখানেই নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন, যার ফলে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানচলাচল ব্যাহত হয়।
এ সময় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের হাতে দেখা যায়, “গোপালগঞ্জ হামলাকারীদের বিচার চাই”, “নেতাদের রক্ত বৃথা যাবে না”, “অপরাধীদের অভয়ারণ্য গোপালগঞ্জ” ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড।
বিক্ষোভ শেষে এক সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন—
এনসিপির উপজেলা শাখার প্রধান সমন্বয়কারী মোসাদ্দেকুর রহমান মানিক
যুগ্ম সমন্বয়কারী তৌহিদুজ্জামান তৌহিদ
পৌর শাখার প্রধান সমন্বয়কারী আল মামুন
পৌর যুগ্ম সমন্বয়কারী এডি মোস্তাক আহাম্মেদ
এনসিপি নেতা সুলতানুস সালেহিন
ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের প্রধান সমন্বয়কারী আবু যাইদ অপু
বক্তারা বলেন,
“গোপালগঞ্জে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর হামলা শুধু একটি দলের ওপর নয়, এটা পুরো দেশের গণতন্ত্রের ওপর হামলা। প্রশাসন যদি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে, তবে হামলাকারীদের নাম খুঁজে পেতে সময় লাগবে না।”
তারা আরও অভিযোগ করেন,
“গোপালগঞ্জ নামটি আজ অপরাধীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের কিছু দুর্বৃত্ত এই জেলাটিকে কলঙ্কিত করেছে। প্রয়োজনে আমরা দাবি জানাব, এই জেলার নাম পরিবর্তন করা হোক। এ ধরনের অপরাধমুক্ত গোপালগঞ্জ চাই আমরা।”
নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,
“যদি দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি নিশ্চিত না করা হয়, তবে এনসিপি আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।”
বিক্ষোভ শেষে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ হয়। তবে সড়ক অবরোধের কারণে সাময়িক যানজটের সৃষ্টি হলেও পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন ছিল এবং পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এনসিপির এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শহরে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষও হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।