মোঃ আমজাদ হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার
জয়পুরহাটে প্রকাশ্যে ছাত্রদল নেতা বিপ্লব আহমেদ পিয়ালকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ভাবি-দেবরসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) গভীর রাতে জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—
শহরের ইসলামনগরের রুবেল ওরফে রুমেল হোসেনের স্ত্রী নাসরিন (২৯)
একই এলাকার সোহেল রানার স্ত্রী শ্রাবণী আক্তার (২৪)
সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের দক্ষিণ কোচকুড়ি গ্রামের ছামছুদ্দীন মন্ডলের ছেলে রাসেল (৩৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাসরিন ও রাসেল সম্পর্কে ভাবি-দেবর।
নিহত পিয়াল ইসলামনগরের মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়ার ছেলে এবং জয়পুরহাট শহর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি ‘বাইক ওয়াশ’ নামে একটি মোটরসাইকেল গ্যারেজ চালাতেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (২৮ মে) দুপুর ১২টার পর ইসলামনগরে পিয়ালের গ্যারেজের সামনে একদল দুষ্কৃতিকারী অবস্থান নেয়। পিয়াল গ্যারেজে এলে তারা গালিগালাজ শুরু করে। প্রতিবাদ করায় তারা লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। পিয়াল দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তারা ধাওয়া করে বাড়ির গেটের সামনে তাকে ঘিরে ফেলে এবং ধারালো বারমিজ ছুরি দিয়ে পেটে, বুকে ও পিঠে একাধিক আঘাত করে।
পিয়ালের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে আসে এবং এ সময় আরও কয়েকজন তার হাত-পা চেপে ধরে নির্মমভাবে হামলা চালায়। স্থানীয়রা পিয়ালকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইসলামনগরের একটি সরকারি জমি লিজ নিয়ে দোকান নির্মাণ করেছিলেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন ও তার সহযোগীরা। ওই দোকানগুলো ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তারা। তবে গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর ছাত্রদল নেতা পিয়াল ওই জমি দখলে নেন, ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়।
আনোয়ারের স্ত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ এবং ১২ মার্চ পিয়ালের ওপর প্রথম হামলার ঘটনায় সান্তাহার জিআরপি থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় আনোয়ারসহ কয়েকজন গ্রেপ্তার হন। বর্তমানে আনোয়ার কারাগারে আছেন।
পিয়াল সম্প্রতি চিকিৎসা শেষে এলাকায় ফিরে এসে আগের মতো প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করলে আবার উত্তেজনা বাড়ে, যার চূড়ান্ত পরিণতি হয় এই নির্মম হত্যাকাণ্ড।
জয়পুরহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুর আলম সিদ্দিক বলেন,
“ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”