রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
‘জনসংখ্যা একটি নির্দিষ্ট ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নওগাঁর রাণীনগরে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৫। দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (১৪ জুলাই) উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা এবং পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান।
সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি রঙিন ও সচেতনতামূলক ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মী, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
পরে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নুরে আলম। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রাণীনগর সদর পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আব্দুল আজিজ।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাকিবুল হাসান। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ না হলে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। পরিবার পরিকল্পনার গুরুত্ব প্রতিটি পরিবারে পৌঁছে দিতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান। তিনি বলেন, “পরিকল্পিত পরিবার মানেই সুখী জীবন। পরিবার পরিকল্পনা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, এটি সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।”
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনা আক্তার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) শফিউল আলম, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
আলোচনায় বক্তারা পরিবার পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক, বর্তমান চ্যালেঞ্জ, ভবিষ্যৎ করণীয় এবং যুবসমাজকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বক্তব্য দেন। এছাড়াও সরকারি সেবাগুলো সহজভাবে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার উপায় নিয়েও পরামর্শ উঠে আসে।
আলোচনা সভা শেষে সেবা কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ সহকারী, শ্রেষ্ঠ পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, শ্রেষ্ঠ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা, শ্রেষ্ঠ উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার এবং শ্রেষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদ এর মধ্যে সম্মাননা ক্রেস্ট ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এই আয়োজনের মাধ্যমে পরিবার পরিকল্পনার গুরুত্ব সম্পর্কে নতুন প্রজন্মসহ স্থানীয় জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করা হয় এবং একটি সচেতন সমাজ গঠনে এ ধরণের উদ্যোগের গুরুত্ব আবারও প্রমাণিত হলো।