স্টাফ রিপোর্টার | গাজীপুর
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গিলারচালা এলাকা থেকে আম্বিয়া খাতুন (৪৭) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (৩ মে) সকাল ৯টার দিকে পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভাড়া বাসা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও, নিহতের পরিবারের অভিযোগে হত্যা সন্দেহে স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতা আম্বিয়া খাতুন স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক ছিলেন। তিনি স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে গিলারচালার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। পরিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা লেগেই থাকত বলে জানায় প্রতিবেশীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। পরদিন সকালে ঘরের আড়ার সঙ্গে আম্বিয়া খাতুনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান তার স্বজনরা। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি জানানো হলে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, “আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং মরদেহটি উদ্ধার করি। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার আলামত মিললেও, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি এবং সন্দেহভাজন হিসেবে নিহতের স্বামীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
নিহতার মেয়ে শারমিন তার মায়ের মৃত্যুকে আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “আমার মাকে মারধর করে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহে আঘাতের চিহ্ন স্পষ্ট দেখা গেছে। এরপর তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার চাই।”
অন্যদিকে, বাড়ির মালিক ও স্থানীয় কয়েকজন জানান, আম্বিয়া খাতুনের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। পারিবারিক অশান্তির কারণে মাঝেমধ্যে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়তেন এবং নিজের শরীরেও আঘাত করতেন।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এই মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে মনে করছেন এবং পুলিশের প্রতি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
শ্রীপুর থানা পুলিশ জানিয়েছে, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ওসি আরও জানান, “ঘটনার সব দিক আমরা খতিয়ে দেখছি। আত্মহত্যা না হত্যা—তা নিশ্চিত হয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভুক্তভোগী পরিবার যাতে ন্যায়বিচার পায়, সে বিষয়েও আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।