মুহাম্মদ আবু হেলাল, শেরপুর প্রতিনিধি:
শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলায় হৃদয়বিদারক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল দুই কোমলমতি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর। এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছে আরও একজন শিশু শিক্ষার্থী। নিহতরা হলেন—সাকিবুল (৮) ও জাকারিয়া (৯), এবং আহতের নাম আমিন (৭)। তারা সবাই স্থানীয় মারকাযুত তাকওয়া মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবং উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের বড় রাংটিয়া দেওয়ানী পাড়ার বাসিন্দা।
রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে উপজেলার বড় রাংটিয়া এলাকার পাতার মোড় নামক স্থানে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাদ্রাসা ছুটির পর বিকেলে বাড়ি ফেরার সময় বেপরোয়া গতিতে আসা একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের ওপর উঠে পড়ে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হয়।
দুর্ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা আহত শিশুদের উদ্ধার করে প্রথমে ঝিনাইগাতী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত তাদের শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই সাকিবুল ও জাকারিয়া মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। আহত আমিনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহত শিশুদের কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবার-পরিজন ও এলাকাবাসী। ছোট ছোট কোমলমতি শিশুদের এমন নির্মম মৃত্যুতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা দুর্ঘটনার পরপরই ঘাতক মাইক্রোবাসটিকে আটক করে এবং চালকসহ পুলিশে সোপর্দ করে। ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “ঘাতক মাইক্রোবাস ও তার চালককে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।”
এদিকে, শিশুদের এমন করুণ মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তাঁরা দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ী চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার হার দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার অভাব ও বেপরোয়া চালকদের কারণে এমন মর্মান্তিক ঘটনা বারবার ঘটছে। এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে প্রশাসনের পাশাপাশি সচেতন নাগরিক সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সচেতন মহল।